শিক্ষকতা নামক একটি
মহৎ পেশায় যারা আসতে চান তারা ইতোমধ্যে আবেদন প্রক্রিয়া শেষ করেছেন।এখন পরবর্তী
লক্ষ্য প্রিলিমিনারী এবং লিখিত পরীক্ষা।৬ই মে অনুষ্ঠিত হবে ত্রয়োদশ শিক্ষক নিবন্ধন
পরীক্ষার স্কুল ও স্কুল ২ এবং কলেজ পর্যায়ের ত্রয়োদশ শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা ১৩ই
মে অনুষ্ঠিত হবে।
১২তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা থেকেই পাল্টে গেছে পরীক্ষার
ধরণ। বিসিএস পরীক্ষার মতো হচ্ছে নিবন্ধন পরীক্ষা। প্রথমে ১০০ নম্বরের প্রিলিমিনারি
পরীক্ষা। পরীক্ষা হবে এমসিকিউ পদ্ধতিতে, সময় এক ঘণ্টা। বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও সাধারণ জ্ঞান থেকে ২৫টি করে প্রশ্ন থাকবে
প্রিলিমিনারিতে। প্রতিটি সঠিক উত্তরের জন্য বরাদ্দ ১ নম্বর, প্রত্যেক ভুল উত্তরের জন্য কাটা যাবে ০.৫০ নম্বর।
পাস করতে হলে কমপক্ষে ৪০ নম্বর পেতে হবে। প্রার্থীর ঐচ্ছিক বিষয়ে ১০০ নম্বরের লিখিত
পরীক্ষা হবে। সময় ৩ ঘণ্টা। লিখিত পরীক্ষায়ও পাস নম্বর ৪০। উত্তীর্ণ হলে মিলবে শিক্ষক
নিবন্ধন সনদ। প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষার সিলেবাস পাওয়া যাবে ওয়েবসাইটে।
লিখিত পরীক্ষার সময়
সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। নম্বরের ভিত্তিতে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীরা
মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত প্রার্থীদের এসএমএসের
মাধ্যমে সময় জানিয়ে দেয়া হবে। নির্ধারিত তারিখে সঙ্গে আনতে হবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র।
লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে তৈরি করা হবে উপজেলা, জেলা ও জাতীয় মেধাতালিকা।
বাংলা -২৫
স্কুল ও কলেজ উভয়
পর্যায়েই ভালো করতে হলে ব্যাকরণের প্রতি জোর দিতে হবে।উদয়ন স্কুলের বাংলার সহকারী
শিক্ষক জানান বাংলা ব্যাকরণ অংশে ভাষারীতি ও বিরাম চিহ্নের ব্যবহার, কারক বিভক্তি, সমাস, প্রত্যয়, সন্ধিবিচ্ছেদ,
ভুল সংশোধন বা শুদ্ধকরণ ও
লিঙ্গ পরিবর্তন থেকে প্রশ্ন আসে। বাগধারা ও বাগবিধি, সমার্থক ও বিপরীতার্থক শব্দ, যথার্থ অনুবাদ ও বাক্য সংকোচন থেকেও প্রশ্ন থাকবে।
ব্যাকরণের প্রায় প্রতিটি অংশ থেকে এক থেকে দুটি করে প্রশ্ন আসে। প্রশ্ন আসে বাংলা সাহিত্য
থেকে। স্কুল পর্যায়ের জন্য নবম ও দশম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক, বোর্ড প্রণীত ব্যাকরণ ও বাংলা প্রথম পত্র বইটি ভালোভাবে
পড়তে হবে। কলেজ পর্যায়ের জন্য নবম-দশমের সঙ্গে দেখতে হবে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ড
বই। প্রথম পত্র বইয়ের প্রতিটি গদ্য ও পদ্যের লেখক পরিচিতির অংশটি ভালোভাবে পড়তে হবে।
গণিত -২৫
গনিতের সাধারণ
সূত্র গুলো ভালোভাবে মনে রাখতে হবে।পাটিগণিতের ঐকিক নিয়ম, লাভ-ক্ষতি, শতকরা, সুদকষা, গড়, লসাগু, গসাগু, অনুপাত-সমানুপাত,
বীজগণিতে মূলদ ও অমূলদ সংখ্যা,
ফাংশন, উত্পাদক নির্ণয়, বর্গ ও ঘন, সূচক ও লগারিদমের সূত্রের প্রয়োগ, জ্যামিতির ক্ষেত্রে রেখা, কোণ, ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ,
ক্ষেত্রফল ও বৃত্ত,
পরিমিতি ও ত্রিকোণমিতি থেকে
প্রশ্ন আসে বলে জানান বিগত পরীক্ষায় সনদ প্রাপ্ত বাবু বিমল ঘোষ।
বোর্ড প্রণীত অষ্টম
থেকে দশম শ্রেণির গণিত বইয়ের প্রতিটি নিয়মের অঙ্ক সমাধান করলে পরীক্ষায় ভালো করা যাবে।
কলেজ পর্যায়ের জন্য দেখতে হবে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির বই। উত্তরের ক্ষেত্রে এককের দিকে
অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।
ইংরেজি -25
ইংরেজির সব প্রশ্নতেই
থাকবে গ্রামারের ব্যবহার। গ্রামারে দুর্বল
হলে কখনোই এ অংশে ভালো করা যাবে না।তাই গ্রামারের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।Completing Sentence, Translation
from Bengali to English, Change of Parts
of Speech ,Right from of Verbs, Fill in the blank with appropriate word, Transformation
of Sentence, Synonyms and Antonyms, Idioms and Phrases, Article. এগুলো থেকে স্কুল ও কলেজ উভয় পর্যায়ের প্রশ্ন
থাকবে।বিগত বছরগুলোর নিবন্ধন পরীক্ষার প্রশ্ন ও বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ইংরেজি
প্রশ্ন সমাধান করলেও বেশ কাজে দেবে বলে জানান বিগত পরীক্ষায় সনদ প্রাপ্ত মোঃ
হারুনার রশিদ।
সাধারণ জ্ঞান-২৫
সাধারণ জ্ঞান
তিনটি ভাগে ভিভক্ত থাকে-
১)বাংলাদেশ সম্পর্কিত
বিষয়।
২)আন্তর্জাতিক
বিষয় ও চলতি ঘটনা
৩)বিজ্ঞান, তথ্য ও প্রযুক্তি, পরিবেশ এবং রোগব্যাধি সম্পর্কিত মৌলিক ধারণা।
সাধারণ জ্ঞান অংশে
বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি,
পরিবেশ, রোগব্যাধি ও চিকিৎসাবিজ্ঞান থেকে সাধারনত প্রশ্ন
আসে। বাংলাদেশ অংশে বাংলাদেশের ভূপ্রকৃতি ও জলবায়ু, ইতিহাস ও সভ্যতা, সংস্কৃতি, ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশের রাষ্ট্রব্যবস্থা, অর্থনীতি, বিভিন্ন সম্পদ থেকে প্রশ্ন থাকে। আন্তর্জাতিক অংশে
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান, আঞ্চলিক ও অর্থনৈতিক
সংস্থা, বিভিন্ন দেশ পরিচিতি,
মুদ্রা, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ, আন্তর্জাতিক দিবস, পুরস্কার ও সম্মাননা, খেলাধুলা থেকে প্রশ্ন থাকে। প্রাত্যহিক জীবনে বিজ্ঞান,
তথ্যপ্রযুক্তি, রোগব্যাধি, চিকিৎসা-স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সংশ্লিষ্ট প্রশ্ন আসতে
পারে এবং সাম্প্রতিক বিষয়ের প্রতি একটু বেশি নজর দিতে হবে বলে জানান বিগত পরীক্ষায়
উত্তীর্ণ মোঃ মনজুর ইলাহি। যেমনঃবিশ্বকাপ ক্রিকেট, পাকিস্তান দলের বাংলাদেশ সফর, এ বছরের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রভৃতি।
লিখিত পরীক্ষা
প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ প্রার্থীরা ১০০ নাম্বার
এর ৩ ঘণ্টার ঐচ্ছিক বিষয় এর লিখিত পরীক্ষা দেয়ার জন্য মনোনীত হবেন।লিখিত পরীক্ষা শুরুতেই
দেখে নিতে হবে সিলেবাস।স্কুল পর্যায়ের জন্য নবম-দশম শ্রেণির বইগুলো পড়তে হবে এবং
কলেজ পর্যায়ের লিখিত পরীক্ষায় ভালো করতে হলে প্রার্থীর অনার্স পর্যায়ের বইগুলো পড়লেই
চলবে। বিগত বছরের প্রশ্ন দেখলে প্রশ্নের ধরণ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে। একটি সাজেশন
করে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক এমনকি প্রয়োজনে স্নাতক পর্যায়ের বই থেকে প্রস্তুতি নিতে
হবে। বেশি বেশি লেখার চর্চা করতে হবে। লিখিত পরীক্ষায় প্রতিটি প্রশ্নেরই বিকল্প প্রশ্ন
থাকে, ফলে একটি না পারলেও অপরটির
উত্তর করা যাবে।
লিখিত পরীক্ষায়
উত্তীর্ণ প্রাথিদেরকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য মনোনয়ন দেয়া হেবে। মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণদেরকে
চুরান্তভাবে সনদ প্রদান করা হেবে।
No comments:
Write comments